পোস্টগুলি

2025 থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ষাঁড় আর ব্যাঙ

  এক জলার ধারে এক ব্যাঙ পরিবার বাস করত । সেই ব্যাঙ পরিবারে অনেক বাচ্চা ছিল । একদিন একটি ব্যাঙের বাচ্চা জলার পাশে স্যাতসেতে মাঠে ঘুরতে গেছিল । সেই মাঠে তখন একটা ষাড় চলছিল । বিশাল যাড়টাকে দেখে বাচ্চা ব্যাঙটি প্রথমটায় একটু হকচকিয়ে গেল। পরে সাহস করে দুর থেকে তাকে ভাল করে দেখতে লাগল । আর যতই দেখতে লাগল ততোই অবাক হয়ে গেল । তারপর এক সময় সে ঘরে ফিরে এল ৷ ফিরে এসে ব্যাঙের বাচ্চাটি তার মাকে বলল, মা, মা, আজকে মাঠে আমি এক পেন্লায় জানোয়ার দেখে এলাম । সে যে কতো বড় আর কতো মোটা তা না দেখলে বিশ্বাসই হবে না তোমার । ব্যাঙ বাচ্চাটির মা তখন একটু অহঙ্কারের স্বরে বলল-ওমা, কী বললি? সে আমার চেয়েও বড়? বাচ্চাটি একটু ব্যঙ্গ করে বলল- আরে, কি বলছ, মা, তুমি! সে তোমার চেয়ে অনেক অনেক গুণ বড়। মা-ব্যাঙটি তখন তার পেটটা ফুলিয়ে বলল, এই এ্যাত বড়? বাচ্চা ব্যাঙটি হো হো করে তাচ্ছিল্যের স্বরে হেসে বলল- হাসালে তুমি, মা, এ তার একশ ভাগের এক ভাগও না। মা-ব্যাঙটি তখন তার পেটটা আরও ফুলিয়ে বলল- _চেয়ে দ্যাখ এবার, এত বড় নিশ্চয়ই নয়! বাচ্চা ব্যাঙটি তখন হাসতে হাসতে বলল- মা, তুমি হাজার চেষ্টা করলেও তার মত বিরাট হতে প...

শেয়াল ও সিংহ

English translation below পশুদের রাজা সিংহ। যেমনি বিরাট তার চেহারা তেমনি তার গর্জন। তাকে দেখলে তাে বটেই, দূর থেকে তার গর্জন শুনলেই বনের পশুরা ভিরমি খেতে, প্রায় আধমরা হয়ে যেত। এক শেয়াল এমন এক বনে বাস করতাে যেখানে কোনাে সিংহ ছিল না। একদিন ক্ষিধের জ্বালায় অস্থির হয়ে শেয়াল ঘুরতে ঘুরতে এমন এক বনে এসে পড়লাে, যে বনে পশুরাজ সিংহ বাস করতো। শেয়াল তখন খাবারের খোঁজে ঐ বনে ঘুরছিল। এমন সময় একটু দূরে সিংহ ডেকে উঠল। সেই ডাক শােনামাত্র শেয়াল ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে মাটিতে বসে পড়লাে। একটু পরে সিংহ যখন তার সামনে হাজির তখন শেয়াল তার ভয়ংকর চেহারা দেখে ভয়ে অজ্ঞানই হয়ে গেল। এরপর শেয়াল আর একদিন সেই বনে এসে আবার সিংহের দেখা পেল। এবার ভয় যে তার না করলাে তা নয়, তবে আগের বারের মত অজ্ঞান আর হল না। বরং কিছুক্ষণ তার দিকে চেয়ে রইল হ্যা, বিরাট চেহারাই বটে, তবে আমারই মত পত্র ছাড়া। এ আর কিছুই তাে নয়। আমায় তাে সেদিন খেয়ে ফেলেনি এই ভেবে শেয়াল তাকে দেখে আর পালালাে না। এর পরের বার বনে এসে সিংহের সঙ্গে যখন তার দেখা হল—তখন তাকে দেখে ভয় যে তার একেবারেই করলাে না তা নয়—তবু বাইরে ভয়ের কিছু না দেখিয়ে তার সাম...

ভেড়ার পাল ও নেকেড়ে বাঘ

একদা এক মাঠে অনেকগুলি ভেড়া চরে বেড়াত । আর সেই ভেড়াদের পাহারা দিত কয়েকটা তেজী কুকুর । নেকড়েরা দূর থেকে দেখে কুকুরের ভয়ে আর তাদের কাছে আসতে সাহস পেত না। মনে মনে বড় ক্ষোভ তাদের । একদিন তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল-এ কুকুর ক'টাই আমাদের শত্রু, কোনোরকমে ওদের সরাতে পারলেই ব্যাস, আমাদের কেল্লা ফতে। কিন্তু কি করে সরানো যায়? সব সময়েই যে তারা ভেড়াগুলোর কাছে কাছে থাকে! নেকড়েদের যখন এইরকম মনের অবস্থা তখন কয়েকটা ভেড়াকে একান্তে পেয়ে বলল-ভাইরা, তোমরা আমাদের থেকে অমন দূরে দূরে থাক কেন বল তোঃ আমরা তো তোমাদের সঙ্গে ভাব করতেই চাই! পারি না, কেবল এ শত্রু কুকুর ক'টার জন্যে। ওরা আমাদের দেখলেই ঘেউ ঘেউ করে তেড়ে আসে । আর তা শুনলেই আমাদের দারুণ রাগ হয়ে যায়। ওদের বিদায় করে দাও ভাইরা, তাহলেই দেখবে তোমাদের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠবে। ভেবে দেখো, কাদের সঙ্গে তোমাদের বন্ধুত্ব রাখা লাভের-ওরা আর কয়টি! ভাল করে দেখো, আমাদের দল কতো বড়। আমাদের অনুরোধ তোমাদের জাত ভাইদের কাছে গিয়ে ভাল করে বুঝিয়ে বলো- দেখবে, বললেই তারা বুঝবে। বোকা ভেড়াগুলো, নেকড়েদের কথায় ভূলে কুকুরগুলোকে বিদায় করে দ...

একটি ইঁদুর সাপ এবং নেউলের গল্প

  একদা এক গর্তে একটি ইঁদুর থাকতাে। একদিন একটি নেউলে সেই গর্তের সামনে হাজির হল। আর ঠিক সেই মুহূর্তেই কোথা থেকে যেন একটি সাপও সেখানে হাজির হলাে। তারা দুজনেই খাবারের সন্ধানে এসেছিল। কিন্তু দেখা গেল সাপে আর নেউলে লড়াই বেধে গেছে। তাদের কাররই আর ইদুরকে মারার কথা মনে রইল না। গর্তের ইঁদুর এদের যুদ্ধে ব্যস্ত দেখে তার গর্ত থেকে বেরিয়ে এল। অমনি সাপ আর নেউল লড়াই থামিয়ে নিজেদের ঝগড়া ভুলে দু’জনেই ইঁদুরটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। রাজনীতির ক্ষেত্রেও এরকমটা প্রায়ই দেখা যায়। বিরােধরত দুইদল যখন দেখে তাদের সাধারণ বিপক্ষ কোনও দল মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে, তখন তারা নিজেদের বিবাদ ভুলে ঐ বিপক্ষ দলকে আক্রমণ করে। উপদেশ - জাতশত্রুরাও স্বার্থের জন্যে পরস্পরে জোট বাঁধে।  Once upon a time, there was a mouse in a hole. One day, a mole appeared in front of that hole. And at that very moment, a snake also appeared there from nowhere. Both of them came in search of food. But it turned out that the snake and the mole had a fight. Neither of them remembered to kill the mouse. Seeing them busy in the fight, the mouse ...

পশু ও মানুষ

 Below is the English translation. দেবতা জিউসের আদেশে প্রমিথিউস পৃথিবীতে পশু ও মানুষ দুই-ই সৃষ্টি করলেন। কিন্তু পশুর সংখ্যা বেড়ে গেল। দেবতা জিউস তখন প্রমিথিউসকে বললেন—পশুর সংখ্যা বড় বেশি হয়ে গেছে। এদের কিছু সংখ্যককে তুমি মানুষে পরিণত কর। দেবতা জিউসের কথামত প্রমিথিউস কিছু পশুকে মানুষ করে দিলেন। ফলে পশু থেকে মানুষ হল। আর তাদের চেহারা মানুষের মত হলেও প্রকৃতি ও আচার-আচরণ তাদের পশুর মতই রয়ে গেল। ফলে সেই সব পশু স্বভাবের মানুষ পৃথিবীতে একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়াল। উপদেশ - পশু স্বভাবের মানুষের থেকে মানুষকে দূরে থাকতে হয়। On the orders of the god Zeus, Prometheus created both animals and humans on earth. But the number of animals increased. The god Zeus then said to Prometheus - the number of animals has become very large. You turn some of them into humans. According to the words of the god Zeus, Prometheus turned some animals into humans. As a result, animals became humans. And although their appearance was like humans, their nature and behavior remained like their animals. As a result, ...

এক মনে কাজ করতে হয়

Below is the English translation. একদা এক মাঠে একদল ভেড়া চরে বেড়াচ্ছিল। ভেড়ার পাল বিকেল হতেই বাড়ি ফেরার জন্যে এগিয়ে চলছিল । বেড়ার পাল অনেকটা এগিয়ে গেল কিন্তু একটা ভেড়ার ছানা পেছনে পড়ে গেল। একটা নেকড়ে বাঘ এই অবস্থায় ভেড়ার ছানাটিকে দেখতে পেয়ে নিঃশব্দে তার পিছু নিল। বাচ্চা ভেড়াটা নেকড়েটাকে দেখতে পেল । সে বলল-বুঝেছি তুমি আমাকে ধরে খেতে চাও, এই তোঃ কিন্তু একটা শর্ত আছে আমার । মরবার আগে আমি বাশির সুরের সঙ্গে নাচতে চাই । তাই আমার অনুরোধ, তুমি বাশি বাজাও আমি তালে তালে নাচি। তারপর- নেকড়ে ভেড়ার ছানার এই কথা শুনে বাঁশি বাজাতে লাগল আর তার সঙ্গে চললো বাচ্চা ভেড়াটার নাচ। আর সেই বাজনা আর নাচের আওয়াজ শুনে সেখানে একদল কুকুর এসে জুটল। নেকড়েকে দেখেই তারা তার দিকে ধাওয়া করল। নেকড়ে ছুটতে ছুটতে কোনোমতে কুকুরদের হাত থেকে বাচল। তারপর অনেক দূরে যখন কুকুরদের নাগালের বাইরে চলে এল তখন এক জায়গায় বসে বিশ্রাম করতে করতে ভাবতে লাগল, খুব শিক্ষা হল আমার, কেমন বুদ্ধর মত আমি শিকার করতে এসে বাশি বাজাতে গেছিলাম । উপদেশ - একমনে কাজ না করলে কাজ পন্ড হয় । বিপদও হতে পারে । Once upon a time, a group of she...

গোবরে গণেশ

  জিউসের মানুষ গড়া হয়ে গেল। হারমিস্কে জিউস বললেন এদের মগজে কিছু বুদ্ধি ঢোকাবার ব্যবস্থা কর । হারমিস তখন বুদ্ধি মাপার যন্ত্র নিয়ে, ক্ষুদ্রাকার মানুষের মগজে মেপে মেপে বুদ্ধি ঢালতে লাগলেন। ফলে মানুষরা হয়ে উঠল বুদ্ধিমান, জ্ঞানী। ঢালতে ঢালতে পাত্রটা যখন একেবারে শুন্য হয়ে গেল তখন বিশালাকায় কয়েকজন তখনও বাকি আছে। কিন্তু এখন কি হবে? বুদ্ধির পাত্র যে একেবারে শুন্য! তাই তাদের আর কিছুই দেওয়া সম্ভব হল না। তাই তারা বুদ্ধিহীন ও মূর্থ হয়ে রইল। দৈত্যরা তাই হল গোবর গণেশ। উপদেশ - চেহারা বিশাল হলেই যে বুদ্ধি বেশি হবে এ ধারণা একেবারেই ভুল। Zeus's people were created. Zeus told Hermes to make arrangements to inject some intelligence into their brains. Hermes then took an intelligence measuring device and started pouring intelligence into the brains of small people. As a result, people became intelligent and wise. When the pot was completely empty, a few giants were still left. But what will happen now? The pot of intelligence is completely empty! So it was not possible to give them anything els...

কুকুরে কামড়াল মানুষ

  একবার একটি লোককে কুকুরে কামড়েছিল। সে এতে দারুণ ভয় পেয়ে যাকেই সামনে দেখে তাকেই জিজ্ঞাসা করে, ভাই আমায় কুকুরে কামড়েছে তুমি যদি এর কোনো ওষুধ জানো তো আমায় বলো। লোকটির এই কথা শুনে একজন লোক বলল-জানি আমি ওষুধ, আমি যা বলব, তা করতে পারবে? লোকটা বলল-নিশ্চয়ই পারব, তুমি বলো-তাহলে শোন, কুকুরের কামড়ে যে ক্ষত তোমার সৃষ্টি হয়েছে, সেই ক্ষতের রক্তে এক টুকরো রুটি ভিজিয়ে যে কুকুরটা তোমায় কামড়েছে তাকে খেতে দাও, তাহলেই তুমি ভাল হয়ে যাবে৷ যাকে কুকুরে কামড়েছে, সেই লোকটি তখন হেসে বলল-ভাই, তোমার এই পরামর্শমত চলতে গেলে রক্তমাখা রুটির লোভে শহরে যত কুকুর আছে তারা সবাই আমাকে তখন কামড়াতে আরন্ত করবে। উপদেশ - বিপদে মাথা ঠিক রেখে কাজ না করলে আরও বিপদে পড়বার সঙাবনা থাকে । Once a man was bitten by a dog. He was very scared and asked whoever he saw, "Brother, I have been bitten by a dog. If you know any medicine for this, tell me." Hearing this, a man said, "I know medicine. Can you do what I tell you?" The man said, "Surely I can." You tell him. Then listen, soak a piece of...

বিড়ালের বাচ্চা

  একদা এক ধনী ভদ্রলোক ছিল ৷ তার যেমন ধন-সম্পত্তি ছিল ঠিক তেমনি তিনি জনসাধারণের বিনোদনের জন্যে প্রচুর অর্থ খরচ করতেন। প্রতি বৎসরই তিনি নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন। একদিন সেই ধনী ব্যক্তিটি লোক দিয়ে ঢ়্যাড়া পিটিয়ে সবাইকে জানিয়ে দিলেন যে-এবার তিনি এমন সব তাজ্জব ও অদ্ভুত জিনিস দেখাবার ব্যবস্থা করেছেন যা এর আগে কেউ দেখেনি । আর এই অদ্ভুত মজার অনুষ্ঠানে যে কেউ অংশগ্রহণ করতে পারবে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যে সবচেয়ে অদ্ভুত ও মজার কিছু দেখাতে পারবে তাকে প্রচুর পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করা হবে। এই ঘোষণা শুনে দেশের নানা প্রান্ত থেকে অপেশাদার ও পেশাদার প্রচুর মানুষ এল । তাদের ইচ্ছে অপরকে প্রতিযোগিতায় হারিয়ে নাম কিনবে । একজন বিখ্যাত হাস্যকৌতুককারী হরবোলাও এল এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে ৷ সে এসে বলল, এমন খেলা সে দেখাবে যে সেরকমটা এর আগে আর কেউ কখনও দেখেনি । প্রতিযোগিতা শুরু হল । সেই অনুষ্ঠানে এত লোকের সমাগম হয়েছিল যে তিল ধারণেরও জায়গা ছিল না । অনুষ্ঠান শুরু হতেই চারদিক নিস্তব্ধ হয়ে গেল । সেই হাস্যকৌতুককারী হরবোলাটি হঠাৎ রঙ্গমঞ্চে উঠে তার মাথাটা নিচু করে উপরকার জামার ভাজের মুখ লুকিয়...

সিংহ ভেড়া আর নেকড়ে

  একদা এক বনে এক নেকড়ে বাস করত। সে কোনােমতেই পশুরাজ সিংহের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারত না। তবে বনের অন্যান্য দুর্বল প্রাণীদের ওপর প্রায়ই অত্যাচার চালাতাে। সেই নেকড়েটি একদিন বেড়ার পাল থেকে একটা বড়সড় ভেড়া ধরে মেরে নিয়ে যাচ্ছিল তার ডেরায়। হঠাৎ পথে পশুরাজ সিংহের মুখখামুখি হয়ে গেল। সিংহটি নেকড়ের কাছ থেকে ভেড়াটা ছিনিয়ে নিল। নেকড়ে তখন কিছু করতে না পেরে দূর থেকে বেশ চেঁচিয়ে বলল—আমার জিনিস এমনি করে কেড়ে নেবার তােমার অধিকার নেই। সিংহ ব্যঙ্গের হাসি হেসে বলল তােমার জিনিস? তা কোনাে বন্ধুর কাছ থেকে তুমি এটা উপহার পেয়েছাে নিশ্চয়ই, তাই না? এই না বলে, সিংহ নেকড়ের সামনেই ভেড়াটার সদ্গতি করতে লাগলাে। উপদেশ - বাটপাররাই চোরকে দোষ দেয়। Once upon a time, there lived a wolf in a forest. He could not compete with the lion, the king of beasts. However, he often tortured other weak animals in the forest. One day, that wolf was killing a big sheep from the fence and taking it to his tent. Suddenly, on the way, he came across the lion, the king of beasts. The lion snatched the sheep from the wolf....

মোরগ ও বেড়াল

  একদা গ্রামে এক বেড়াল ছিল। সে গৃহস্থের বাড়িতে এটা ওটা চুরি করে খেতাে। একবার বেড়ালটা এক গৃহস্থের বাড়ি থেকে একটা মােরগ ধরে নিয়ে এল। এখন সে মােরগটাকে মেরে খেতে চাইল। কিন্তু শুধু শুধু তাে একজনকে মারা যায় না। একটা অজুহাত থাকা চাই তাে! সে তখন মােরগটাকে বললাে, তুই মারাত্মক একটা আপদ, রাতে ডেকে মানুষকে স্বস্তিতে ঘুমােতে দিস্ না। মােরগটি উত্তরে বলল, এ তাে আমি ভাল উদ্দেশ্যেই করি। রাত্রি শেষে আমার ডাকে ঘুম ভাঙলে মানুষরা সকাল সকাল তাদের দিনের কাজ শুরু করতে পারে। বেড়াল তখন ভাবল—মােরগ কথাটা ঠিকই বলেছে। তাই কথাটা উড়িয়ে দিয়ে অন্য একটা দোষ ধরে বলল, তুই তোের মাবােনেদের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করি। অত্যাচার করি। মােরগ তখন শান্ত স্বরে উত্তর দিল—এতেই আমার মালিক খুশি হয়, বুঝে দেখাে কথাটা, মালিকের সম্পদ বাড়ে। | বেড়াল তখন বিরক্তি প্রকাশ করে বলল—নাঃ তাের সঙ্গে মেলা ফ্যা ফ্যা করার সময় আমার নেই। কিন্তু তাই বলে আমার যে খিদে পুষে রাখতে হবে পেটে, তারও কোনাে মানে নেই—তােকে আমি খাবােই। এই বলে বেড়াল মােরগটার টুটি চেপে ধরে মেরে খেয়ে ফেলল। উপদেশ - দুর্জনের ছলের অভাব হয় না। Once upon a time there...

উইল

  অনেক অনেক দিন আগেকার কথা । এক ভদ্রলোক তিনটি মেয়ে রেখে মারা গেছিলেন। ভদ্রলোকের তিনটি মেয়ে তিন রকমের ছিল। একটি খুব সুন্দরী আর বিলাসিনী, আর একটি ছিল মিতব্যয়ী আর কঠোর পরিশ্রমী । ক্ষেত খামার নিয়েই সে মাথা ঘামায় তাছাড়া ভাল সুতোও কাটে । তৃতীয় মেয়েটি ছিল বিকলাঙ্গ এবং কুরূপা। ভদ্রলোক মারা যাবার আগে একটা উইল করে গেছিলেন। সে উইলে তিনি সমান ভাগে ভাগ করে দিতে বলে গেলেন। কিন্তু উইলে একটা শর্ত ছিল। যে ধনসম্পদ তারা পাবে তা কিন্তু তারা কেউই ভোগ করতে পারবে না। শুধু তাইই নয় ভোগ না করলে আবার প্রত্যেককেই এক হাজার পাউণ্ড করে দিতে হবে তাদের মাকে। এই অদ্ভুত উইনের খবর সারা এথেন্সে ছড়িয়ে পড়ল । ভদ্রলোকের স্ত্রী ছুটলেন বড় বড় আইনজীবীদের কাছে উইলের রহস্য উদ্ঘাটন করতে । তারা অনেক মাথা ঘামিয়েও বের করতে পারলেন না যে এ কি করে সম্ভব? মেয়েরা সম্পত্তির যে ভাগ পাবে, তা তারা ভোগ করতে পারবে না! অথচ আবার এই না ভোগ করতে পারার জন্যে এক হাজার পাউন্ড দিতে হবে । আর এই অর্থই বা তাদের তখন আসবে কোথাথেকে? বহুদিন ধরে বহু চেষ্টা করেও যখন এ ব্যাপারের কোনো কূল কিনারা মিললো না তখন ভদ্রলোকের বিধবা স্ত্রী আইনের ধার না ধ...

এক শূকরী ও এক কুকুরী

  একদা এক কুকুরী ও এক শূকরীর মধ্যে প্রচণ্ড তর্কাতর্কি চলছিল। তর্কটা হচ্ছিল এই নিয়ে যে কার বাচ্চা সহজেই ভূমিষ্ঠ হয়। কুকুরীটি বলল, শুনে রাখাে—যত চারপেয়ে জন্তু আছে তাদের মধ্যে সবার চেয়ে বেশি সহজে এবং জলদি আমার পেট থেকে বাচ্চা বেরােয়। শূকরীটিও সহজে ছাড়বার পাত্রী নয়। সেও চুপ করে থাকতে পারল না। সে আরও এক ধাপ গলা চড়িয়ে বলল, তা বেশ তাে, ভাল কথা, কিন্তু একথা তুমি অস্বীকার করতে পার , তােমাদের বাচ্চাদের তখন চোখ ফোটে না, কিছুই দেখতে পায় না তারা। ঐ বাচ্চাদের বড়ই কষ্ট হয়। আর তােমার সব বাচ্চাগুলাে বাঁচেও না। তাই তাড়াতাড়ি এরকম বাচ্চার জন্ম দিয়ে কী লাভ হয় তােমার? উপদেশ - হেলাফেলার কাজ নিখুঁত হয় না। Once upon a time, a dog and a pig were having a heated argument. The argument was about whose baby was born easily. The dog said, "Listen, I give birth to my baby more easily and quickly than any other four-legged animal." The pig was also not one to be easily abandoned. She could not remain silent either. She went one step further and said, "That is very good, but you can den...

প্রকৃত বন্ধু

  দুই বন্ধু ছিল। দু'জনেরই গলায় গলায় বন্ধুত্ব ছিল। একদিন তারা বেড়াতে বেরিয়েছিল ৷ বেড়াতে বেড়াতে তারা এক জঙ্গলের কাছে এসে পড়ল আর দুই বন্ধুকে দেখে একটা ভালুক সেই জঙ্গলটা থেকে হঠাৎ বেরিয়ে এল । দুইবন্ধু ভালুকটাকে দেখে খুব ভয় পেয়ে গেল । দু'জনের মধ্যে একজন চট্পট একটা গাছে উঠে লুকিয়ে পড়ল । অপর বন্ধুটি গাছে ওঠা জানতো না । ভয়ে তার প্রাণ শুকিয়ে গেল। তার বন্ধুটি তার কথা না ভেবে নিজের প্রাণ বাচাতে গাছে উঠে পড়েছিল। এখন তাকে নির্ঘাৎ ভালুকের হাতে প্রাণ হারাতে হবে। অগত্যা তার আর কোনো উপায় নেই দেখে মরার ভাণ করে সে মাটিতে শুয়ে পড়ল । কারণ সে শুনেছিল ভালুকরা না কি মরা মানুষ ছোয় না । ভালুক এবার মাটিতে শোওয়া লোকটির কাছে এসে গেল। লোকটি তখন নিঃশ্বাস বন্ধ করে মরার মত সেখানে পড়ে রইল। ভালুকটি কিছুক্ষণ শোকার পর লোকটাকে মরা মনে করে সেখান থেকে চলে গেল। ভালুকটা চলে যেতেই যে বন্ধুটি গাছে উঠে লুকিয়েছিল সে গাছ থেকে নেমে এসে বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করলে, ভালুকটা তোমার কানে কানে কী যেন বলে গেল, কী বললো ভাই? বন্ধুটি চট্পট্‌ উত্তর দিল, ও বলে গেল, যে বন্ধু তোমাকে বিপদের মুখে ফেলে পালায়, তাকে আর কোনোদিন...

একটি গাছ এবং একজন পথিক

  সময়টা শ্রীম্মকাল। দারুণ গরম পড়েছে। চারিদিকে জলাশয়গুলি শুকিয়ে খট্খটে হয়ে গেছে । মাটিও ফেটে চৌচির । এই ঠা-ঠা রৌদ্রে কয়েকজন পথিক পথ চলতে গিয়ে বড়ই ক্লান্ত হয়ে পড়ল। পা যেন আর তাদের চলতে চাইছিল না। এমন সময় পথের ধারে একটা বটগাছ দেখতে পেয়ে, পথিকরা গাছের শীতল ছায়ায় গিয়ে বসে পড়ল। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেবার পর তাদের শরীর বেশ ঠাণ্ডা হল ক্লান্তিও দূর হল। এরপর তারা নিজেদের মধ্যে নানারকম আলোচনা আর গল্প করতে লাগল । হঠাৎ ওদের মধ্যে একজন গাছটার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলে উঠল-কি গাছরে বাবা, না আছে এতে কোনো ভাল ফুল, না আছে কোনো ভাল ফল। আর ফলগুলির দিকে একবার চেয়ে দেখো-ত বড় গাছ, তার নাকি এমন ক্ষুদে ক্ষুদে ফল। মানুষের কোনো কাজে আসে না এ গাছ! বটগাছটি পথিকটির কথা শুনে আর চুপ করে থাকতে পারলো না। বলে উঠল-বুঝলাম, মানুষের মত এমন অকৃতজ্ঞ জীব আর দুনিয়াতে নেই। রোদে পুড়ে এসে আমার ছায়ায় বসে তোমরা গা জুড়ালে, ঠান্ডা হলে, সুস্থ হলে, এখনও আর একটু আরাম করবার জন্যে বসে রয়েছো-আর অকৃতজ্ঞের মত এখনো বলে চলেছো-আমি তোমাদের কাজে লাগি না। হঠাৎ টুপ্‌ করে একটা বটের ফল, নিন্দা করা লোকটার মাথার ওপর পড়ল । ব...

কলহ ও বিবাদ

  খুব সরু একটা পথ দিয়ে হারকিউলিস যাচ্ছিলেন । পথে যেতে যেতে দেখলেন, পথের একধারে মাটিতে কি যেন একটা পড়ে রয়েছে । দেখতে অনেকটা আপেলের মত। কি খেয়াল হতেই হারকিউলিস পা দিয়ে সেটা চেপে দিলেন। আর কী আশ্চর্য! সঙ্গে সঙ্গে সেই বস্তুটা দ্বিগুণ বড় হয়ে গেল। তাই না দেখে হারকিউলিস খুব রেগে গেলেন ৷ বেশ জোরে একটা লাথি মারলেন তিনি তার ওপর ৷ এবং হাতের মুগুরটা দিয়ে এক ঘা কষালেন ৷ এর ফলে সেটা বেড়ে বেড়ে এত বড় হয়ে গেল যে তাতে সারা পথটা গেল আটকে । ব্যাপার-স্যাপার দেখে হাতের মুগুর ফেলে দিয়ে হারকিউলিস এক পাশে সরে গিয়ে অবাক হয়ে সেদিকে তাকিয়ে রইলেন । আর এই দেখে দেবী এথেনা হঠাৎ সেখানে আবির্ভূত হয়ে বললেন-এ কী করলে তুমি? তুমি না বীর! বীরের এই কি ধর্ম? এই যা তুমি সামনে দেখছ এ হচ্ছে কলহ । বিবাদের বা বিরোধের পরিণাম, রীতি ও তার মতিগতি । ওর সঙ্গে লাগতে না গেলে ও আগে মেমন ছিল, ঠিক তেমনই থাকত আর লাগতে গেলে ও ফুলে ফেপে কেমন বাড়তে থাকে তা তো তুমি নিজের চোখেই দেখলে । উপদেশ - কলহ ও বিবাদ জগতের সকল অনর্থের কারণ । Hercules was walking along a very narrow path. As he was walking, he saw something lying on the g...

নতি স্বীকার

  একদা এক বনে জলপাই গাছ আর নলখাগড়ার গাছ ছিল। একদিন ওদের মধ্যে খুব তর্ক শুরু হল। তর্কের বিষয় ছিল কার শক্তি এবং সহ্যগুণ বেশি তাই নিয়ে। জলপাইগাছ নলখাগড়াকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে বলছিল-তুই আর মুখ নেড়ে কথা বলিস না। তোর গায়ের জোর আমার খুব জানা আছে। একটু বাতাস বইলেই তো তুই নুয়ে পড়িস। নলখাগড়া গাছ এ কথার কোনো জবাব দিল না। একটু পরেই উঠল প্রচণ্ড ঝড়। নলখাগড়া নুয়ে পড়ে পড়ে, ঝড়ের ঝাপটা এড়িয়ে যেতে লাগল । আর জলপাই গাছ দাড়িয়ে ঝড় রুখতে গিয়ে তার দাপটে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল। উপদেশ - শক্তিশালীর কাছে নতি কীকার দোষের নয় যদি তাতে নিজেরই লাভ হয়। Once upon a time, there was an olive tree and a reed tree in a forest. One day, they had a big argument. The argument was about who was stronger and more tolerant. The olive tree was belittling the reed tree and saying, "Don't talk with your mouth. I know how strong you are. If you get a little wind, you will bend down." The reed tree did not reply to this. Soon after, a fierce storm arose. The reed tree bent down and tried to avoid the...

এক সিংহ ও এক চাষী

  এক যে ছিল চাষী। তার গােয়াল ঘরে অনেকগুলি গরু ছিল। চাষীটি চাষবাস করে আর গোরুর দুধ বিক্রি করে বেশ ভালভাবেই সংসার চালাতাে। একদিন হয়েছে কি চাষীর গােয়াল ঘরে এক সিংহ ঢুকে পড়েছিল। চাষী সিংহটাকে ধরবার জন্যে য়াল ঘরের দরােজায় শিকল তুলে দিল। এদিকে সিংহটি যখন দেখল বন্ধ ঘর থেকে তার পালাবার কোনাে উপায় নেই, তখন সে ভয়ঙ্কর গর্জন করতে করতে গােয়ালের গােরুগুলির প্রাণসংহার করতে শুরু করল। চাষী যখন বুঝল সিংহকে সে ধরতে পারছে না, আর মাঝখান থেকে শুধু তার গরুগুলি মারা পড়ছে তখন সে তাড়াতাড়ি ঘরের দরজা খুলে দিল। সঙ্গে সঙ্গে সিংহটি ছুটে বেরিয়ে গেল। চাষী বউ এবার চাষীর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলাে, ব্যাপার কি, এত গােলমাল কীসের? চাষী সব ব্যাপারটা তার বউকে খুলে বলল। চাষীর বউ অমনি বলে উঠল—যেমন তােমার বুদ্ধি, যে জন্তুকে দূরে দেখলে লােকে ভয়ে পালায়, দিশে হারায়, আর তুমি কিনা তাকে ধরবে মনে করে দরােজায় শিকল দিয়েছিলে? এখন গরুগুলাে সব মারা গেল। দরােজা খােলা থাকলে একটা গরু যেত। যেমন বুদ্ধি তেমনই শিক্ষা হয়েছে তােমার। উপদেশ - নিজের ওজন বুঝে কাজ করতে হয়। There was a farmer. He had many cows in his cowshed. The far...

বুদ্ধিবল

  এক যে ছিল কুকুর । আর ছিল এক মোরগ । দুইজনের গলায় গলায় বন্ধুত্ব ছিল। দুই বন্ধু একসঙ্গে দেশ ভ্রমণে বেরিয়েছিল । পথে যেতে যেতে রাত্রি হয়ে গেল। আর রাত হতেই তখন মোরগটা এক গাছের ওপরে একটা ভাল ডাল বেছে নিয়ে ঘুমোতে গেল। আর কুকুরটা? কুকুরটা রইল গাছেরই গোড়ায় এক বড়সড় গর্তে । দু'জনেই ঘুমিয়ে পড়ল। এদিকে ভোর হয়ে আসছে। মোরগ তার অভ্যাস মত কৌকর কৌক করে ডেকে উঠল । সেই ডাক শুনে এক খেঁকশিয়ালীর বড় লোভ হল। একটু দূরেই সে তার ছানাপোনা নিয়ে বাস করতো। মোরগের ডাক শুনে সে এগিয়ে এল সেই গাছের তলায়। তারপর সত্যিই কি সুন্দর গলা তোমার, শুনে বুকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে। করছে, নেমে এসো, আমি তোমায় আলিঙ্গন করি । এই কথা শুনে মোরগটিও মিষ্টি করে বলল, এই গাছের নিচে আমার দারোয়ান ঘুমোচ্ছে, তাকে আগে জাগাও, সে উঠে দরজা খুলে দিক, তখন আমি নিচে নামতে পারব। খেঁকশিয়ালী তখন কেবলই খুঁজছিল, কোথায় সেই দারোয়ান, কাকে দরোজা খোলার কথা বলতে হবে, অমনি কুকুর উঠে এক লাফে খেঁকশিয়ালীর ঘাড় চেপে ধরল । তারপর তাকে কামড়ে ছিড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলল । উপদেশ - দুরর্লেরা সবলের সাহায্য নিয়ে আতি সহজেই শত্রু দমন করতে পারে । There was a ...

নেপোয় মারে দই

  একটা হরিণের দখল নিয়ে এক সিংহ আর ভালুকের মধ্যে জোর লড়াই হল । লড়াই করতে করতে দু'জনেই রীতিমত জখম হয়ে পড়ল এবং তাদের নড়বার শক্তি পর্যন্ত রইল না, মৃতপ্রায় হয়ে তারা রাস্তায় পড়ে রইল। এক খেঁকশিয়াল সেই পথ দিয়ে যাচ্ছিল। যেতে যেতে দুই মহাবীরের এঁ অবস্থা দেখে এবং একটা মৃত হরিণকে দুইজনের মাঝে পড়ে থাকতে দেখে সে সেটা কামড়ে ধরে টেনে হিচড়ে নিয়ে গেল। উত্থান শক্তি রহিত সিংহ ও ভালুক তখন নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল ভাগ্য আর কাকে বলে? হরিণটার জন্যে আমরা লড়াই করে মরলাম, আর কিছু না করে পেয়ে গেল সেটা একটা বজ্জাত খেঁকশিয়াল! উপদেশ - নিজেদের মধ্যে গওগোলে অপরের সুবিধা হয় । A fierce fight broke out between a lion and a bear over the possession of a deer. In the fight, both of them were badly injured and could not even move, they lay dead on the road. A jackal was passing by. As he was passing by, he saw the two heroes in this condition and saw a dead deer lying between them, so he grabbed it and dragged it away. The lion and the bear, who had lost their strength, then started arguing amo...

একটি দাঁড়কাক অন্য কাকেরা

  এক ছিল দাঁড়কাক। নিজের জাতভাইদের চেয়ে সে ছিল বেশ জমকালাে আর বড়সড় দেখতে। তাই সে একদিন জাতভাইদের অবহেলা করে বড় কাকদের কাছে গেল। গিয়ে বললাে—ভাই আমি তােমাদেরই একজন, আমাকে তােমাদের দলে নাও । কাকের দল দেখল তাদের সঙ্গে এর কোন কিছুতেই মিল নেই, না চেহারায়, না গলার স্বরে। অতএব কাকের দল, দাঁড়কাককে বলল—যাও যাও, দূর হও এখান থেকে, মেলা ফ্যা ফ্যা না করে এখান থেকে মানে মানে কেটে পড়। কাকের দলের কাছে আঘাত পেয়ে দাঁড়কাকটা যখন তার জাতভাইদের কাছে ফিরে এল, তখন তারাও তাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিল। জাতভাইরা বলল, তুমি আমাদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে, ঘৃণা করে ত্যাগ করে চলে গিয়েছিলে আবার আমাদের কাছে এসেছ, তােমার লজ্জা করছে না? দূর হয়ে যাও আমাদের সামনে থেকে! উপদেশ - নিজের বংশ পরিচয় দিতে কোনাে সঙ্কোচ করতে নেই। There was a raven. He was much more handsome and big-looking than his fellow ravens. So one day, he ignored his fellow ravens and went to the big crows. He said, “Brother, I am one of you, take me into your group.” The crows saw that he had nothing in common with them, neither in appearance nor...

কাজ আর কথা

  সক্রেটিস একজন প্রখ্যাত দার্শনিক ছিলেন। তার জন্যে একটা বাড়ি তৈরি হয়েছিল৷ বাড়িটা ছিল যেমনি ছোট, তেমনি নিরাভরণ, আর বাড়িটায় আসবাব ও জিনিসপত্রও কিছু ছিল না । অতো বড় নামকরা লোকের একটা তুচ্ছ বাড়ি দেখে একটা লোক আর চুপ করে থাকতে না পেরে সক্রেটিসের সামনেই মন্তব্য করল-_ আপনার মত এমন পৃথিবী বিখ্যাত লোকের কিনা এইরকম একটা বাড়ি? ছিঃ ছিঃ। সক্রেটিস হেসে বললেন-তাতে কী হয়েছে? আমার সত্যিকারের শুভানুধ্যায়ী বন্ধুরাই তো এটাকে সুন্দর সুন্দর আসবাবপত্র দিয়ে সাজিয়ে বাসযোগ্য করে তুলতে পারেন। উপদেশ - মুখে নয়, কাজেই প্রকৃত বন্ধুর পরিচয় । Socrates was a famous philosopher. A house was built for him. The house was as small as it was bare, and there was no furniture or belongings in the house. Seeing such a small house of such a famous person, a man could not remain silent any longer and commented in front of Socrates - Does such a house belong to a world-famous person like you? Shit, shit. Socrates laughed and said - What happened to that? Only my truly well-wishing friends can decorate it with be...

সারস ও বাঘের গল্প

  একদা এক বাঘের গলায় এক টুকরো হাড় ফুটেছিল। অনেকদিন ধরে বাঘটি মাংস খেয়ে আসছে, তবে এবারের মত তার গলায় কখনও হাড় ফোটে নি, দারুণ যন্ত্রণা হচ্ছিল বাঘের । নিজে অনেক চেষ্টা করল হাড়টাকে বার করবার কিন্তু কিছুতেই হাড় বার করতে পারল না। তাই বাঘ মনে মনে বলতে লাগল-আহা, এমন যদি কাউকে পেতাম যে হাঁড়টা টেনে বের করে দিতে পারে। এমন সময় হঠাৎ সেই পথ দিয়ে এক সারস যাচ্ছিল। সারস পাখিকে যেতে দেখে বাঘ অতিকষ্টে বলল-ভাই, আমার একটা উপকার করতে পারবে? আমার গলায় হাড় ফুটেছে, এই হাড়টা যদি তুমি বার করে দিতে পার তাহলে আমি তোমাকে পুরস্কার দেব। বাঘের কথায় সারস গলে জল হয়ে গেল। বাঘের মত প্রাণী তাকে উপকার করবার জন্যে অনুরোধ জানাচ্ছে। মনে মনে একটু তার যেন গর্বও হল । অতএব সারস বাঘের গলার ভেতর নিজের মাথা ঢুকিয়ে দিয়ে ঠোটে করে অনায়াসে সেই ফুটে থাকা হাড়টা বার করে দিল । বাঘের প্রতিশ্রতিমত সে বলল- হাড় তো বের করে দিলাম, এবার আমার পুরস্কার দিন। বাঘ ক্রুর হাসি হেসে বলল বাঘের মুখের ভেতর থেকে তোর মাথাটা আস্ত বের করে নিতে পেরেছিস, সেইটেই তো তোর পুরস্কার রে! এরপরও আবার পুরস্কার চাইছিস ভাগ হতভাগা এখান থেকে । টু শব্দটি ক...

কোকিলের ডাকে বসন্ত আসেনা

  একদা এক দেশে এক তরুণ বাস করত। তার নাম ছিল পুকোস। সে ছিল ভবঘুরে আর উড়নচন্ডী। সে পৈতৃক বিষয় সম্পত্তি কিছু পেয়েছিল। কিন্তু সে সব ফুঁকে উড়িয়ে দিয়েছিল অল্পদিনের মধ্যেই। অবশেষে তার ওড়াতে বাকী ছিল পরনের শুধুমাত্র একটা জামা। একবার এক সোয়ালো পাকি কি করে যেন বসন্তকাল আসার আগেই তার নজরে এল । তাকে দেখে উড়নচন্ডী তরুণটি মনে করল এই তাে গরম কাল এসে গেল, আর জামার দরকার কি? এই ভেবে - সে জামাটাও বেঁচে দিল । এরপর যথারীতি শীত জেঁকে বসল। চারিদিক অমনি বরফে ছেয়ে গেল। তরুণটি পথে যেতে যেতে দেখল সেই সােয়ালােটাও ঠাণ্ডায় জমে মরে পড়ে রয়েছে। তরুণটি তাকে ঐ অবস্থায় দেখেই বলে উঠল হতভাগা, তুইও মরলি, আর আমাকেও মেরে গেলি! উপদেশ - সময় বুঝে সব কাজ করতে হয়। না হলে পদে পদে বিপদে পড়তে হয়। Once upon a time, there lived a young man in a country. His name was Pukos. He was a vagabond and a vagabond. He had inherited some property from his father. But he blew it all away in a short time. Finally, he had only one shirt left to wear. Once, a swallow somehow caught his eye before spring. Seeing him, the young ...

দোষ গুণ

  অনেক অনেকদিন আগের কথা । প্রমিথিউস মানুষ সৃষ্টি করে তাদের প্রত্যেকের গলায় দু'টো করে থলি ঝুলিয়ে রাখলেন। একটি সামনে আর অপরটি পেছনে। সামনের থলিতে রাখলেন অপর লোকের দোষ-ক্রটি আর পেছনেরটায় রাখলেন নিজের দোষ-ক্রটি । তাই এখনও পর্যন্ত মানুষ নিজের দোষ দেখতে পায় না, শুধু দোষ দেখে অপরের । আর অপরের দোষ অনেক দূর থেকেও মানুষ দেখে ফেলে। অথচ তার নিজের দোষটি চোখেও পড়ে না। উপদেশ - সকল সময় নিজের দোষ দেখে আত্মবিশ্লেষন করতে হয় । A long time ago. Prometheus created humans and hung two bags around each of their necks. One in front and the other behind. In the front bag he put the faults of others and in the back bag he put his own faults. That is why till now people do not see their own faults, they only see the faults of others. And people see the faults of others even from a long distance. But they do not even see their own faults. Advice - You have to always look at your own faults and do self-analysis

মুচি আর দুই বামনের গল্প

  এক দেশে ছিল এক গরিব মুচি। গরিব হলেও মুচি ছিল ভীষণ কর্মঠ আর সৎ। বেচারা যথেষ্ট খাটাখাটনি করেও কিছুতেই নিজের ভাগ্য ফেরাতে পারছিল না। দিন দিন বরং সে গরিব থেকে তস্য গরিবে পরিণত হচ্ছিল। শেষমেশ অবস্হা এতটা করুণ হলো চামড়া কিনে যে জুতো বানাবে সেই পয়সাও মুচির কাছে ছিল না। যেটুকু চামড়া তার কাছে ছিল, সেটা দিয়ে বড়জোর একপাটি জুতো বানানো সম্ভব। কী আর করা! পরদিন সকালে একপায়ের জুতো তৈরি করার ইচ্ছায় সন্ধ্যার দিকে বসে মুচি চামড়া মাপ মতো কাটছাঁট করে রাখলো। তারপর শান্ত মনে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো। পরদিন ভোরে মুচি সকালের প্রার্থনা সেরে, জুতো বানানোর কাজে বসতে গিয়ে দেখে তার টেবিলের উপর নিখুঁতভাবে তৈরি একজোড়া জুতো রাখা আছে। মুচি জুতো জোড়া দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেল। তার মুখে কোনো কথাই ফুটলো না। জুতোজোড়া হাতে নিয়ে সে খুব খুঁটিয়ে দেখলো। জুতোর সেলাই এত চমৎকার কোত্থাও একবিন্দু খুঁত নেই! মুচি এমন অসাধারণ ভাবে তৈরি জুতো দেখেনি আগে। কিছু সময়ের মধ্যেই মুচির দোকানে এক ক্রেতা এলেন। জুতোজোড়া তার ভীষণ পছন্দ হলো। বেশ ভালো দামেই ক্রেতাটি জুতোজোড়া কিনে নিয়ে গেলেন। জুতো বিক্রির টাকায় মুচি আর...

একটি গাছ এবং একজন পথিক

  সময়টা শ্রীম্মকাল। দারুণ গরম পড়েছে। চারিদিকে জলাশয়গুলি শুকিয়ে খট্খটে হয়ে গেছে । মাটিও ফেটে চৌচির । এই ঠা-ঠা রৌদ্রে কয়েকজন পথিক পথ চলতে গিয়ে বড়ই ক্লান্ত হয়ে পড়ল। পা যেন আর তাদের চলতে চাইছিল না। এমন সময় পথের ধারে একটা বটগাছ দেখতে পেয়ে, পথিকরা গাছের শীতল ছায়ায় গিয়ে বসে পড়ল। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেবার পর তাদের শরীর বেশ ঠাণ্ডা হল ক্লান্তিও দূর হল। এরপর তারা নিজেদের মধ্যে নানারকম আলোচনা আর গল্প করতে লাগল । হঠাৎ ওদের মধ্যে একজন গাছটার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলে উঠল-কি গাছরে বাবা, না আছে এতে কোনো ভাল ফুল, না আছে কোনো ভাল ফল। আর ফলগুলির দিকে একবার চেয়ে দেখো-ত বড় গাছ, তার নাকি এমন ক্ষুদে ক্ষুদে ফল। মানুষের কোনো কাজে আসে না এ গাছ! বটগাছটি পথিকটির কথা শুনে আর চুপ করে থাকতে পারলো না। বলে উঠল-বুঝলাম, মানুষের মত এমন অকৃতজ্ঞ জীব আর দুনিয়াতে নেই। রোদে পুড়ে এসে আমার ছায়ায় বসে তোমরা গা জুড়ালে, ঠান্ডা হলে, সুস্থ হলে, এখনও আর একটু আরাম করবার জন্যে বসে রয়েছো-আর অকৃতজ্ঞের মত এখনো বলে চলেছো-আমি তোমাদের কাজে লাগি না। হঠাৎ টুপ্‌ করে একটা বটের ফল, নিন্দা করা লোকটার মাথার ওপর পড়ল । ব...

কুয়া

 কুয়া ভালোই ছিল কাশিনাথপুরের মানুষ। গ্রামের প্রান্তে ছোট শান্ত নদী। সেখান থেকে বিস্তীর্ণ ফসলের খেত শুরু। তাতে বছরে দুই এমনকি তিনবারও ফসল হয়। গ্রীষ্ম-শীত কোনোটারই বাড়বাড়ন্ত নেই। শুধু বর্ষাকালে বৃষ্টি হয় অকাতর। নদী বেয়ে সেসব দ্রুত চলে যায় বলে বন্যাটন্যারও বিশেষ উপদ্রব নেই। গ্রামের মাঝখানে প্রকাণ্ড বটগাছকে ঘিরে বাজার বসে। দোকানপাটের পাশাপাশি এখানে ডাকঘর, মাধ্যমিক স্কুল, মাদ্রাসা, মন্দির—সবই আছে। সেই সঙ্গে আছে কাশিনাথপুরের বিখ্যাত জমিদার ত্যাগনারায়ণ চৌধুরীর বাড়ি। দানশীল ভদ্রলোক বলে ত্যাগনারায়ণের খ্যাতি আছে। সবাই পেটেভাতে ভালো ছিল বলে এলাকায় অশান্তি বড় একটা নেই। কিন্তু গোল বাধল দেশভাগের পর। পঞ্চাশের দাঙ্গায় ত্যাগনারায়ণের একমাত্র ছেলে মুকুন্দ অস্থির হয়ে উঠলেন। তিনি তত দিনে কলকাতায় পড়াশোনা শেষ করে রীতিমতো থিতু হয়েছেন। দেশের বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ বড় একটা নেই। খবরাখবর যা পান তা লোকমুখে, নয়তো আনন্দবাজার-স্টেটসম্যান পত্রিকা মারফত। ফেলে আসা দেশের সংবাদ স্বভাবতই বড় বীভৎস ও বিপজ্জনক শোনায় তাঁর কানে। বাবাকে আগে থেকেই চলে আসার জন্য পত্রাঘাত করছিলেন তিনি। দাঙ্গার খবর শুনে চরমপত্র দিয়ে বসলেন। চিঠি পাও...